Kousik Das January 2014 ~ Kousik's Diary

Tuesday 7 January 2014

আঙ্কেল বিড়ি টা নেভান

কাল বাসে এক ভদ্রলোক সিগারেট ফুকছিল ।
আমি জাস্ট ভদ্রভাবে বললাম , আঙ্কেল বিড়ি টা নেভান ।

ভদ্রলোক তেলে বেগুনে জ্বলে আগুন ...
বেশ করা ভাবেই
বললেন , ভাই আমার পয়সায় আমি কি খাই তাতে তোমার কি ?

আমি বললাম ,

প্রথমত , পাব্লিক প্লেসে স্মোক করা ইলিগাল ।

দ্বিতীয়ত , আপনি যে সিগারেট টা জালাচ্ছেন তা অক্সিজেন
পুরিয়ে বাতসে কারবন ডাই অক্সাইড সহ ২৩ টি বিসাক্ত গ্যাস
ছাড়ছে বাতাসে । যার কারনে আপনার পরিবারের মানুষ গুলো
সমেত আমি বিষ পান করতে বাধ্য হচ্ছি । আপনাকে কেউ
অধিকার দেয়নি আমার ভাগের অক্সিজেন টা বিড়ি জ্বালিয়ে
নষ্ট করার । তাই এর পর চাপা নারবেন তো লাগাবো এক চর ।

ভদ্রলোক তো হা ... এতো কিছু তো ভাবি নি ...

এখন ভাবুন ।।
Read More

দুর্গ

প্রথমে ওনারা ঈশ্বর সৃষ্টি করিল
নিজেরা সাজিল দালাল ।
সেবা করো মোড় , ঈশ্বরের হুকুম
দাও সবারে জানান ।
এতক বলিয়া কাটিল জুগ ,
একদিন শ্রমিকের মনে উঠিল হুজুক ,
ঈশ্বর নয় যথেষ্ট ।।

এরপর তেনারা সৃষ্টি করিল গোষ্ঠী ,
নিজেরা সাজিল প্রধান ।
ঠেকাইতে ক্ষোভ এইবার শেষে ,
ক্ষত্রিয় দিল অবদান ।
সেবা করো মোড় , প্রধানের হকুম
দাও সবারে জানান ।
এতক বলিয়া কাটিলও জুগ ,
আবার শ্রমিকের মনে হুজুক ,
প্রধান নয় সর্ব শক্তিমান ।

এবার তেনারা সৃষ্টি করিল রাষ্ট্র ,
নিজেরা সাজিল পতি ।
শ্রমিকের রক্ত না চুষিলে ,
দেশের ভীষণ ক্ষতি ।
পরিল ধন্য , দেশের জন্য
আইন হয়েছে জারি ...
বিপথে গেলে পিঠে পরবে ,
১০০ চাবুকের বারি ।

এবার যখন উঠিল হুজুক ,
মার্কস , লেনিন বুঝিল সুযোগ ।
সাম্যের কথা পরিতে কানে ,
জ্বলিয়া উঠিল রক্ত ।
লাখ শ্রমিক একটাই নজরুল ,
গাহিল সাম্যের গান ।
দিয়াছি অনেক, দিতেহবে বুঝি
আরও লাখ লাখ লাখ প্রান ।

চেয়ে দেখো দূরে , ওই লাল ভোঁরে
উঠিতেছে নয়া সূর্য ,
লাখ শ্রমিক , একটাই লক্ষ
হে দালাল , এবার ভাঙ্গিব তোমার দুর্গ ।।

দুর্গ ,
কৌশিক দাস
১৬ / ৫ / ১৩
Read More

পারবে বাঁচতে ১৫ মিনিট ?

চোখ খুলে সুমন দেখল ধুলোয় ধূসরিত তার শরীর । বিছানায় যে তোষক ছিল তা প্রায় পাথরে পরিনত হয়েছে শক্ত হয়ে ।
তার ঘরের ছাঁদ এর ভাঙ্গা কোনা দিয়ে ঠিকরে আসা সূর্যের রশ্মি যেন তার সর্বাঙ্গে অগ্নি সংযোগ করছে । বুকের ভেতর টা
মোচর দিয়ে উঠলো তার । দেয়াল গুলো থেকে চুন সড়কি খসে পরছে । হচ কচিয়ে উঠে বসলো সে । চারি দিকে একটু
চোখ বুলিয়ে নিয়েই উঠে দাঁড়াল ।

তেষ্টায় বুক তার ফেটে জাচ্ছে । বাতাসে একটা তিব্র সালফারের গন্ধ ফুসফুস যেন জ্বালিয়ে দিচ্ছে তার । কোনও মতে ঘড়
থেকে বেড় হতেই এক গাদা সূর্যের আলো তার চামড়া ঝলসিয়ে দিতে লাগলো । তার জীবনের ২০ টা গ্রীষ্মে এমন তাপ সে
জীবনে অনুভব করে নি । যেন সে একটা ঝাল মসালা পূর্ণ একটা প্রেসার কুকারে তাকে সেদ্ধ করা হচ্ছে জল ছাড়া । বারান্দা
ছেরে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে সে দেখল সিঁড়ির পর আর তার চেনা উঠোন নেই । সবুজ ঘাস গুলো যেন রাতা রাতি উধাও করে
কোনও জাদুকর তার মন্ত্র শক্তিতে সেখানে এক বালুর সমুদ্র তৈরি করেছে ।

নড়বরে পদক্ষেপে ৩ টে সিঁড়ি নেমে বালু তে পা দিয়ে তার মনে হল সে যেন সেই প্রেসার কুকারের তলায় পা রেখেছে । কিছু টা
দূর চলার পর সে দেখল দূর দূর পর্যন্ত শুধু বালু আর বালু । তার থেকে যেন ধোঁয়া উঠছে । মাথার ওপরে সূর্য টা যেন বালু গুলো
কেও গলিয়ে দিতে চায় । শুধু মাঝে রয়েছে ধ্বংস স্তূপে পরিনত হওয়া কয়েকটা বহুতল । সেই বালুর সমুদ্রে জাগায় জাগায়
পরে রয়েছে ভাঙ্গা যন্ত্রাংশ । তার বাড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল সেই জাদুকর যেন তাদের বাড়ি টার প্রতি মায়া দেখিয়ে ছেরে তাকে
সজত্নে রেখেছে একটু উছু একটা ঢিপি তে । কিন্তু তা সত্ত্বেও মনে হচ্ছে একটা ঝড়ো হয়ায়া যেন বাড়িটির প্রতি টা ইট আলাদা
করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে ।

নিঃশ্বাস এর কষ্ট টা তার বেড়েই যাচ্ছিল । একটু জলের খোঁজে হাতড়ে হাতড়ে সে চলতে লাগলো । পা দুটো যেন তার এগোতে
চায় না । হঠাত ই সে যেন হোঁচট খেল একটা গোল পাথরে । নড়বরীয়ে পড়ে গেল সে । পাথর টার দিকে তাকিয়ে সে দেখতে পেল
একটা মাথার খুলি সূর্যের আলো তে চক চক করছে । আর গোল চোখের ছিদ্র দুটো যেন তার দিকেই তাকিয়ে আছে । তারপর
তার আর কিছু মনে নেই । শুধু আস্পস্ট কয়েকটা জান্ত্রিক শব্দ শুনতে পেরেছিল সে ।

যখন তার জ্ঞান ফিরল , সে এক ধবধবে সাদা বিছানায় শুয়ে ছিল । আর একজন নার্স তার পাশে দাড়িয়ে ছিল । সুমন চোখ
ফেরাতে পারছিল না তার দিক থেকে । তার মনেহচ্ছিল জীবনে যেন প্রথম বার এর জন্য কোনও মেয় কে দেখেছে । অসম্ভব
মায়ায় ভরা তার চোখ দুতি । হথাত সুমনের দিকে সেই গোলাপের পাপড়ির মতো ঠোঁট দুটো থেকে প্রশ্ন ছুটে এল ।
- " তোমার নাম কি ? কি করতে বাইরে গেছিলে ? "
সুমন কিছুটা অপ্রুস্তুত হয়ে থতমত খেয়ে গেল । তারপর আমতা আমতা করে সব ঘটনা খুলে বলল ।
-"সবি তো বুঝলাম, কিন্তু তুমি বাইরে কেন গেছিলে ? "
- " আমার তো কিছু মনে নেই । কিছু বুঝতে পারছিনা আমি "
-" তুমি এখন সুস্থ , এবার তুমি জেতে পারো "
এতক্ষনে সে অনুভব করল , তার ফুসফুসের জ্বালা টা আর নেই । শরীরেও অনেক আরাম লাগছে । কিন্তু সে কিছু বুঝতে পারছিল
না । সে বলল ,
" কোথায় যাব আমি ? আমার বাড়ি তো মরুভূমি হয়ে গেছে । মা , বাবা , ভাই কাউকেই তো দেখলাম না কোথাও ।
তারা কি বাইরে আমার জন্য অপেক্ষা করছে ? "
- " সত্যি তুমি কিছু বুঝতে পারছ না ? তোমার কি সত্যি কিছু মনে পরছে না ? "
- "না , সত্যি । আমি মিছেমিছি আপনার সাথে মশকরা কেন করব ? "
নার্স কোথায় যেন চলে গেল । ১০ মিনিট পর একজন ৬ ফুট লম্বা মানুষ কে নিয়ে প্রবেশ করল । দেখে সুমন বুঝতে পারল ইনি
ডাক্তার ।

সব সুনে ডাক্তার ডাক্তার নার্স এর কাছে ফিস ফিস করে কি সব যেন বলল । তার পর সেই নার্স সুমনের কাছে এসে বলল ,
-" আমার নাম লিসা । তুমি এখন সুস্থ । আমার সাথে চলো , তোমাকে সব বুঝিয়ে দেব "
এই কথা সুনে সুমন মনে মনে খুসি হল । কিন্তু তার মনে চলছিল হাজার চিন্তা । লিসা তাকে নিয়ে একটি গাড়ি তে উঠল যার
কোনও চাকা নেই , তারপর বলতে লাগলো ,
" এটা আমাদের চেম্বার নাম্বার 69069।... এখানের স্টেট এর সবচেয় ছোটো চেম্বার । এখানে শুধু হাসপাতাল আর চিকিৎসা
সংক্রান্ত কার্যকলাপ হয় । বলতে পারো পুরো চেম্বার টাই একটা হাসপাতাল । তোমাকে আমাদের সার্চ রোবটেরা ওপেন ওয়েদার
থেকে উদ্ধার করেছে । " কিছুই বুঝতে পারছিল না সুমন সে বল্ল , "এইসব চেম্বার , ওপেন ওয়েদার কি ? আমার বাড়ির কি হয়েছে ?
আমাদের বাগানের লেবু গাছ গুলো কোথায় ? " প্রশ্ন শুনে লিসা অবাক হয়ে বল্ল , "তুমি কি জানো না , ৩৪ বছর আগে পরমাণু
যুদ্ধের পর আমাদের জঙ্গল গুলো বেপরোয়া ভাবে ধ্বংস করা হয় । তারপর আমেরিকা চিন এর ওপর এক রাসায়নিক আক্রমন করে
যার বিষক্রিয়া পুরো দুনিয়া তে সালোক সংশ্লেষ বন্ধ হয়ে যায় । সব গাছ মারা যায় আর আমাদের পূর্ব পুরুষ যারা বেঁচে যায় তারা
এই চেম্বার গুলো বানিয়ে এখানে বসতি স্থাপন করে ।"

লিসা এইসব বলতে বালতে গাড়ি টা থেমে যায় । একটা খোলা জাগায় এসে তারা দারায় । সুমন বুছতে পারে জায়গা টা মোটেও খোলা
নয় । একটা কাঁচ দিয়ে ঢাকা । আর বাইরে আরও ৬-৭ টা বুদ বুদ আকারের কাঁচের অর্ধ গোলক দেখতে পেল সে। সুমন বল্ল "কোন
পরমানু যুদ্ধের কথা বলছ তুমি? দ্বিতীয় বিশ্ব জুদ্ধ শেষ হয়েছে সে তো অনেক দিন । কই এমন তো কিছু হয় নি " লিসা অবাক হয়ে
বলল তুমি জানো তুমি কি বলছ ? তুমি জানো তুমি কত সালে আছ ? তোমার মাথা ঠিক আছে তো ? " সুমন বলল অবশ্যই । কাল
অব্ধি তো ৪/৬/ ২০১৩ ছিল । " লিসা বল্ল , " একটু তোমার ডান দিকের স্ক্রিন এর টাস্ক বারের একদম ডান কোনায় ক্যালেন্ডার টা দেখো । "
সেদিকে তাকিয়ে সুমন দেখল সবি তো ঠিক আছে৫ /৬/২০১৩, খালি 0 টাকে কেন যেন এক মনে হচ্ছে ......

হঠাত আবার সুমনের চোখ খুলে গেল ।রোজকার মতো মা বলছে সারা দিন শুধু ঘুম , ১১ টা অবধি কেউ ঘুমায় ? পড়াশুনা না করলে
খাবি কি করে ইত্যাদি ইত্যাদি । চোখ কচলাতে কচলাতে সুমন বল্ল " মা , কাল তো উঠোনের আম গাছ টা কেটে ফেললে , না খেয়ে
তো ১৫ দিন তাও বাঁচা যায় । শ্বাস না নিয়ে পারবে বাঁচতে ১৫ মিনিট ? " । ...মা ছেলের প্রশ্ন শুনে হা করে তার ঘামে ভেজা মুখ এর দিকে
তাকিয়ে থাকলো ।

আজ 5th জুন । বিশ্ব পরিবেশ দিবস । টাকা তো অনেক অর্জন করছেন , বা করার চেষ্টা করছেন আপনার ভাবি প্রজন্ম কে দিয়ে
যাওয়ার জন্য । একবার ভেবে দেখেছেন ? টাকার বিছানায় শুয়ে সে বাঁচতে পারবে তো শ্বাস না নিয়ে ১৫ মিনিট ?
Read More

© 2013 Kousik's Diary , AllRightsReserved.

Designed by Kousik Das