Kousik Das November 2013 ~ Kousik's Diary

Friday 22 November 2013

চন্দ্রমল্লিকা (Chandramallika , Flowers of winter )




চন্দ্রমল্লিকা । বাড়ির ছাঁদ থেকে । 
Read More

সূর্য 2

সূর্য ।
দ্বিতীয় ভাগ ।
( প্রথম ভাগ পড়ুন )

আজকে সারে চার বছর পর সূর্য সংসোধনাগার থেকে বের হল । বাইরে বের হয়েই তার সব কিছুই অচেনা লাগছিল । শহর টা যেন দিন দিন আরও জোয়ান হয়ে যাচ্ছে । এতো ভাবার সময় কই তার ? সে হাটতে লাগলো তার বস্তির দিকে ।

সূর্যের লকাপে থাকার সময় হাফেজ কাকা তার মায়ের দুঃসংবাদ টা দিয়ে গেছিল । সেই তারপর থেকে সে একটাও চেনা মুখ দেখতে পারে নি । সংসধোনাগারে তার সাথে জে সকল ছেলে মেয় রা ছিল , তাদের মধ্যে মিলি ছিল তার সবচেয় ভালো বন্ধু । মিলির সাথে তার প্রথম কথা হয়েছিল খাওয়ার সময় । প্রথম যেদিন তাকে হোমে রেখে যায় পুলিস , সেদিন রাতের খাবার সামনে রেখে পাথরের মতো বসে ছিল সূর্য । মিলি জিজ্ঞেস করেছিল , সে খাবে কি না । না খেলে তাকে দিয়ে দিতে । সূর্য দিয়েও দিয়েছিল মিলি কে। তারপর থেকেই মিলি তার সব সময়ের সঙ্গি হয়ে যায় ।

 এইতো , বছর দুইএক আগে , সংসোধনাগারের সুপার মিলিকে কোথায় যেন নিয়ে গেছিল । তিন দিন হোমে ফেরেনি মিলি । তিন দিন পরে যখন সে ফিরল , রুগ্ন , ভগ্ন চেহারায় , তিন মাস সে কথা বলেনি সূর্যর সাথে ।

জীবনটার ওপর বিতৃষ্ণা এসে গেছে সূর্যর । এখন সে সব বোঝে ।  মাঝে মাঝে তার মনে হয় এই দুনিয়া থেকে কথাও নির্জনে পালিয়ে যেতে । ভবতে ভাবতে হঠাৎ সে এসে পড়ল রেল লাইনের ধারে । যেখানে আগে সে আবর্জনার স্তূপ থেকে ভাংরি কুরোত । কিন্তু এখন সেখানে আবর্জনার স্তূপ নেই , সুন্দর একটা স্টেসনারিস এর দোকান হয়েছে ।

দুমিনিট হাঁটলেই তার বস্তি এসে পড়ার কথা । কিন্তু কোথায় বস্তি ? সেখানে তিনটে বড় বড় বিল্ডিং । সূর্য বুঝতে পাড়ল সে হোমেই বেশ সুখে ছিল । এখন তার যাওয়ার একমাত্র গন্তব্য ভাংরি কাকুর দোকান ।

কিছু টা দূর হেটেই ভাংরি কাকুর দোকান । ঢোকার আগে একটু ইতস্তত হচ্ছিল সূর্যর । পাঁচ বছর আগের কথা মনে পড়লে তার এখনো কান্না পায় । কিন্তু জে শহরে সে ছোটো থেকে বড় হল , সেই শহরে এই একটি মাত্র দোকান ছারা তার চেনা বলতে আর কিছুই নেই ।

টিনের গেট টা সেই আগের মতই আছে ।ঠিক আগের মতো নেই ,  দিন দিন যৌবন প্রাপ্ত করা শহরে , শুধু এই গেট টাই জেন  সময়ের নিয়মে বৃদ্ধ হয়েছে । ভেতরে ঢুকে সে ডাক দিল ভাংরি কাকু বলে । ভাংরি কাকুর দারি কাচা পাকা থেকে একটু বেশি পাকা হয়ে গেছে । তবুও চোখ দুটো দেখলে এখনো ভয় লাগে সূর্যের ।

প্রথমটায় ভাংরি কাকু তাকে চিনতে পারে নি । কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যেই তাদের মধ্যে পরিচিতি পর্ব চুকে গেল । যেরকমটা সূর্য ভেবেছিল, সেরকম টা হল না ।  
Read More

Saturday 16 November 2013

মহান নভেম্বর বিপ্লব প্রসঙ্গে ...

মার্কস ও এঙ্গেলসের দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদের দর্শনের ওপর ভিত্তি করে ১৯১৭ সালের ৭ নভেম্বর সংগঠিত হয়েছিল মহান নভেম্বর বিপ্লব । লেনিনের নেতৃত্বে সংগঠিত হওয়া এই বিপ্লব বঞ্চিত , শোষিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করে মুক্তি এনে দিয়েছিল তাই নয় , রাশিয়াকে একটি প্রগতিশীল উন্নত রাষ্ট্র হিসাবেও প্রতিষ্ঠিত করেছিল । আজকে উন্নয়ন বলতে আমরা যা বুঝি , তার থেকে হাজার ক্রোশ দূরে সেখানে উন্নয়নের যজ্ঞ শুরু হয়েছিল । রবীন্দ্রনাথ রাশিয়ার চিঠি তে যেমন বলেছেন , সেখানে চলছিল মানুষ তৈরির যজ্ঞ । মানুষ কে , মানুষের চিন্তা কে উন্নত করার এক অভূতপূর্ব কর্মকাণ্ড । কিন্তু সেই বিপ্লবের ফল শুধু রাশিয়ার ভেতরেই সিমাবদ্ধ থাকেনি । সেই বিপ্লব হয়ে উঠেছিল মুক্তির স্বপ্ন দেখা দুনিয়া জুড়ে হাজার হাজার প্রলেতারিয়েতের অনুপ্রেরনা , নতুন আরম্ভের সূর্য ।

আজকের পুঁজিবাদী সমাজের জাঁকজমকে প্রতিটি মানুষের সামনেই পথভ্রষ্ট হওয়ার হাজারো সরঞ্জামের মাঝে অন্ধকারে আলোর শিখার মতো টিম টিম করে জ্বলছে নভেম্বর বিপ্লবের শিখা । আর সেই টিম টিম করে জ্বলা শিখাই যেন সমগ্র পৃথিবীর নিপীড়িত , বঞ্চিত , শোষিত মানুষের আশা , উত্তাপের কেন্দ্রস্থল । বিপ্লবের স্বপ্ন দেখা প্রতিটা যুবকের মনেই আশা - প্রেরনার উৎস হয়ে উঠেছে সেই শিখা ।

আজকে নভেম্বর বিপ্লব পার করেছে ১০০ বছরের কাছাকাছি , পতন হয়েছে রাশিয়ার । ধনতন্ত্রের পদানত হয়েছে রাশিয়া । সমগ্র দুনিয়ায় সমাজতন্ত্রের স্বপ্ন আজকে ব্যাক গিয়ারে । পুঁজিবাদ তার বিষাক্ত জাল বিস্তার করেছে চার দিকে । বিপ্লবও হয়ে উঠেছে মুনাফার বস্তু । কিন্তু যে হাতে গোনা সংখ্যা আজও সত্যির পথে চলতে চায় মুক্তি খুঁজতে , তাদের মনে নভেম্বর বিপ্লবের স্মৃতি আজও ঝর তোলে ।

সোভিয়েত রাশিয়ার পতন ঘটেছে । বিপ্লবের ইতিহাস আজ বিকৃত , স্মৃতিও ম্লান । ভারতের প্রেক্ষিতে সি পি এম এর মতো কিছু কমিউনিস্ট নাম ধারি নির্লজ্জ বুর্জোয়া সেবক দল নভেম্বর বিপ্লবের ধারে মরিচা সৃষ্টি করতে ব্যাস্ত হয়েছে । কিন্তু মহান নভেম্বর বিপ্লব ব্যর্থ হয়ে যায় নি ।

প্রকৃতপক্ষে বিপ্লব কখনো ব্যর্থ হয় না , বিপ্লবের আগুন স্বল্প সময়ের জন্য স্তিমিত হয় মাত্র । নভেম্বর বিপ্লব আজ সমগ্র মানুব জাতীর অভিজ্ঞতার অংশ হয়ে দারিয়েছে । এর থেকে পিছু হটার উপায় নেই , পথ রয়েছে শুধু এগিয়ে যাওয়ার ।

শোষিত বঞ্চিত মানুষ তার অধিকার অর্জনের সংগ্রাম ও লড়াই , চালিয়ে যাবে । নভেম্বর বিপ্লবের শিখা জ্বলতে থাকবে কেয়ামতের শেষ দিন পর্যন্ত , মানুষের সেই সংগ্রামের অনুপ্রেরনা হয়ে । মহান নভেম্বর বিপ্লব জিন্দাবাদ । বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক ।
Read More

বন্দুক নিলে হাতে ( Banduk nile hate , Kabir suman )

কিছুই পরেনা পাতে , তাই বন্দুক নিলে হাতে ...
সাল বনের দস্যি ছেলে এতো সাহস কোথায় পেলে ? 

সাল মহুয়ায় খুজি কাব্য , ছুটি ছাটায় বেড়াতে গিয়ে ...
আজ কারখানা নিয়ে ভাববো , কোনও শ্রেষ্ঠী কে সাথে নিয়ে । 

তুমি বন বাদারের লোক , সাল বনের দস্যি ছেলে... 
বড় একরোখা দুটি চোখ , তাই বন্দুক খুঁজে পেলে । 

৪৭ সাল থেকে , শুধু খিদেই দেখলে চেখে ... 
কার অন্ন কাদের খাওয়া , বোকা ছেলের কান্না পাওয়া ।

অরণ্যে দিন রাত্রি , আমি চলচ্চিত্র যাত্রী ...
আমি সুটিং করেত আসি , আমি সভ্যতা ভালো বাসি ।

আছে সভ্যতা কোনখানে , খোঁজো উন্নয়নের মানে ...
ভাবো কোন পথে তুমি ছুটবে , বড় কারখানা গড়ে উঠবে ।

পাবে দিন গুঁজে যান কাজ(!!!) ,পড় গণতন্ত্রের সাজ ...
নাকি স্বপ্ন দেখবে রাতে ? একা বন্দুক নিয়ে হাতে ?

কিছুই পরেনা পাতে , তাই বন্দুক নিলে হাতে ...
সাল বনের দস্যি ছেলে এতো সাহস কোথায় পেলে ?

- কবীর সুমন
Read More

বোকা বুড়োর গল্প. ( Mao se tang )

আজকে একটি গল্প বলব , বোকা বুড়োর গল্প । তারসাথে বলব বর্তমান সমাজের সাথে গল্পের কি মিল । গল্পটির উৎস ও প্রচারক ছিলেন মাও সে তুং , আর আমি এটা রিসেন্ট এক দাদার কাছে শুনেছি । 

পাহাড়ের আড়ালে একটা গ্রাম ছিল । পাহাড়ের জন্য সেই গ্রামে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে পারত না । গ্রামে শিতের খুব দাপট , তার সাথে ফসলও হয় না ।পাহারটা ছিল গ্রামের অভিশাপ ।

একদিন এক বুড়ো কে হঠা ৎ দেখাগেল ছেনী , হাতুরি নিয়ে পাহারে উঠে পাথর ভাঙতে । বুড়ো পাহাড় ভাঙ্গার চেষ্টা করছে দেখে গ্রাম বাসি উপহাস করতে লাগলো । দুই একজন বুড়ো কে জিজ্ঞেস করলো তার এরুপ আচরনের কারন । বুড়ো বলেছিল , সে এই পাহাড় তার নিজের সুখের জন্য নয় তার পরবর্তী প্রজন্মের সুখের জন্য ভেঙ্গে যেতে চায় । তার মৃত্যুর পর তার ছেলে , তারপর তার নাতী , এভাবে তারা একদিন পাহাড় টা ভেঙ্গে ফেলবে আর তার পরবর্তী প্রজন্ম সূর্যের তাপ উপভোগ করতে পারবে ।

বেশিরভাগ লোক উপহাস করলেও , দুই একজনের কাছে বুড়োর যুক্তি গ্রহণযোগ্য মনে হল । তারাও বুড়োর সাথে যোগ দিলেন । পাহাড় ধিরে ধিরে সত্যি ভাঙতে লাগলো । এই দেখে অধিকাংশ গ্রামবাসী বুড়োর সাথে যোগ দিল ।

অবশেষে দেখা গেল , বুড়োর জীবনেই পাহারটা তত টা ভেঙ্গে ফেলা গেল , যাতে সূর্যের আলো গ্রামে পৌছাতে পারে । আর সেই বোকা বুড়ো সমস্ত গ্রামের জীবনযাত্রায় আমূল পরিবর্তন এনে দিল ।

বর্তমান পরিস্থিতিতি তে সেই পাহাড় হচ্ছে পুঁজিবাদী সমাজ ব্যাবস্থা যা সমগ্র মানব সমাজের প্রগতির অন্তরায় । আমরা হয়তো পুঁজিবাদের পাহাড় ভেঙ্গে বিপ্লবের স্বপ্ন দেখা বোকা বুড়ো দের দেখে উপহাস করি , আমরা ভাবি পাহাড় টা থাকুক , আমরা উচু ইমারত বানিয়ে রোদের আভাষ পাবো কিন্তু সত্যি হল , পাহাড় ভাঙ্গা ছারা সমাজের এই টাল মাতাল পরিস্থিতির সমাধান করা সম্ভব নয় । আমরা দুটো কাজ করতে পারি , হয় উচু ইমারত বানিয়ে শুধু নিজে ভালো থাকার চেষ্টা করতে পারি , অথবা বোকা বুড়োদের লরাইয়ে সামিল হয়ে পাহাড় ভাঙ্গার কাজ করতে পারি । আরও একটা নির্জীব অবস্থান আছে , যা কোনও পাশে না গিয়ে চিরকাল অন্ধকারে পরে থাকা । কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই অবস্থান ও পাহাড় ভাঙ্গা শ্রেণীর বিপক্ষেই কাজ করে ।

আমাদের শুধু আমাদের পক্ষ নির্ণয় করতে হবে । আমরা কি করবো , অন্ধকারে থেকে যেমন আছে সব তেমন চলতে দেবো , না বোকা বুড়ো দের সাথে সামিল হয়ে পাহাড় ভাঙ্গার লড়াই করবো । আমি থাকি আর না থাকি , বোকা বুড়ো রা তাদের লড়াই চালিয়েই যাবে , আর পাহাড় টা একদিন ভাঙবেই । আমি শুধু পাহাড় ভাঙ্গা দলের অংশ হব , না শধু সুবিধাবাদী হয়ে কাপুরুষের মতো পাহাড় ভাঙ্গার পর সূর্যের আলো ভোগ করবো সেটা আমার নিজেকেই ভাবতে হবে ।
Read More

© 2013 Kousik's Diary , AllRightsReserved.

Designed by Kousik Das