Kousik Das December 2013 ~ Kousik's Diary

Friday 27 December 2013

মধ্যম গ্রাম ধর্ষণ ও কিছু ভাবনা ... ( Rape case in maddhyamgram )

বাবা অসুস্থ বলে ডেকে নিয়ে গিয়ে গত পঁচিশে অক্টোবর মধ্যেমগ্রামে ওই কিশোরীকে গণধর্ষণ করে কয়েকজন যুবক। পরদিন থানায় অভিযোগ জানায় কিশোরীর পরিবার। কিশোরীর মেডিক্যাল টেস্টও করা হয়। মেডিক্যাল টেস্ট সেরে ফেরার পথে তুলে নিয়ে গিয়ে ফের গণধর্ষণ করা হয় কিশোরীকে। এঘটনায় ছজনকে গ্রেফতার করে পুলিস।

এরপর থেকে ধৃত দুষ্কৃতীদের সঙ্গীরা অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য ক্রমাগত হমকি দিতে থাকে ওই পরিবারকে। আতঙ্কে মধ্যমগ্রাম ছেড়ে এয়ারপোর্ট দু নম্বর গেটের কাছে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে পরিবার। অভিযোগ, সেখানেও চলে আসে দুষ্কৃতীদের সঙ্গীরা। অভিযোগ তোলার জন্য ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হয় পরিবারকে। একইসঙ্গে কিশোরীর নামে কুত্‍সা ছড়ানোর কাজ চলতে থাকে। আজও ওই পরিবারের বাড়িতে হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। হুমকির পাশাপাশি চলে কুত্‍সা । অসম্মান সহ্য করতে না পেরে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে কিশোরী। গুরুতর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় আরজি করে ভর্তি করা হয়েছে তাকে। [ 24 ঘণ্টা ]

প্রশাসন - আইন আইনের পথে চলবে ।

এ বি পি সুমন - সরকারের ব্যারথতা । মুখ্যমন্ত্রী ধর্ষক দের আস্কারা দিচ্ছেন ।
২৪ ঘণ্টা অঞ্জন - নিস্ক্রিয় প্রশাসন । মুখ্যমন্ত্রী নারীর অধিকার দিতে ব্যার্থ ।
আনন্দবাজার - অগ্নিদগ্ধ ধর্ষিতা , নিস্ক্রিয় সরকার , নিস্ক্রিয় প্রশাসন ।

হানী সিং - আমি তো শুধু ফিগারের বর্ণনা দিয়ে গান করি । ধর্ষণ করতে তো বলি না ।
সানি লিওন - আমি তো ধর্ষণ আটকাতেই আমার ভিডিও জুব সমাজ কে দিয়েছি ।

ঋত্বিক ঘটক - বোন কি শুধু আমার আছে ? তোমাদের ও হবে ।

কিউরিয়াস মাইন্ড - যে সমাজ একের পড় এক ধর্ষক তৈরি করলো , যে সংস্কৃতি প্রবৃত্তি তে উস্কানি দিল , যে গান ফিগারের বর্ণনা দিল , যে ভিডিও ধর্ষণ শেখাল , তা নিয়ে সবাই চুপ । যত দোষ সরকার ।
Read More

প্রসঙ্গ হানী সিং , ও বন্ধুর সাথে আড্ডায় কথপো কথন ... ( Honey Singh )

ইয়ো ইয়ো হানী সিং ...
একটা গান বের করেছে । ব্লু আইস ।

Blue eyes hypnotize teri kardi ai mennu
I swear! chhoti dress mein bomb lagdi mennu
Glossy lips, uff yeh tricks
Baby lagdi ai killer
Oh yeah oh yeah
Katal kare tera bomb figure ...

উফফ সে কি গান ... ছোটো ড্রেস , ফিগারের বর্ণনা ।। তারপর ... তারপর... ।। পোলাইপান তো শুধু গান সুইনাই থামে না , পুরাই হানী সিং হবার চায় , তাই চুল এর স্টাইল টাও পালটায় পালাইচে । আবার হানিসিং নিজেই বলছে , কলেজের প্রিন্সিপ্যাল নাকি তাঁর ফ্যান , সে ফুন কইরাই পাস করায় দিব , যদি মাইয়া তাঁর লগে ক্লাবে জাইতে রাজী হয় ।

-ভাই এটা কি গান শুনছিস?

-আরে ভাই এটা হানিসিং এর লেটেস্ট গান ।ভিডিও দেখবি?আমার মোবাইলে এইচ ডি আছে ।

-না থাক । গান টা অনেক বাজে । শুধু যৌনতার উস্কানি । ভালো কিছু কথা , সুর তাল তো কিছু নেই ...

-তুই ভাই তোর ভাসনবাজি বন্ধকর । তুই আসলে আড্ডা টাই মাটি , তুই একটা ব্যাকডেটেদ পিস ।

- ঠিকি বলেছিস ভাই । তবে মেয় দের সম্পর্কে এরকম মন্তব্য করা টা কি তাদের ছোটো করা নয় ? এটা কি আধুনিকতা ?

-আরে তুই কি জানিস , মেয় দের প্রশংসা এভাবেই করতে হয় আজকাল ।

-তাই নাকি ? এটা আধুনিক প্রশংসা ?

-আলবাত ।

-আমি তোর মা আর দিদির প্রশংসা করি এইভাবে ?

-সালা বোকাচোদা ...

-তোরা প্রশংসা করলে আধুনিক , আমি করলে " বোকাচোদা " ?

-ছার তোর আধুনিক হয়ে কাজ নেই ।

-ওকে , এই গান আগে বন্ধ কর ।

সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে দিন দিন অসামাজিক হয়ে যাচ্ছি ।
-------------------------
ব্রেকিং নিউজ :- বামফ্রন্টের মিছিলে তৃণমূলের হামলা, আহত ১ মহিলা সমর্থক ।

২৪ ঘণ্টা অঞ্জন - গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ ।
এ বি পি সুমন - এক নায়ক তন্ত্র ।
আনন্দবাজার - সন্ত্রাস ।

মুখ্যমন্ত্রী - মনেনাই ? আমার চুলের মুঠি ধইরা বিধান সভা থেকে তারায় দিছিলি ?

কিউরিয়াস মাইন্ড - কাউকে আঘাত করলে দশ গুন সহ্য করার ক্ষমতা থাকা উচিত ।
Read More

হে বঙ্গ , ভুলিও না ...



হে বঙ্গ , বুঝিলাম মমতার শাসনে তোমরা তৃপ্ত নও , বুঝিলাম সরকারী কর্মী রা ডি এ হইতে বঞ্চিত , বেকার সম্প্রদায় চাকুরি খুজিয়া হয়রান , তবু ভুলিও না সিঙ্গুর , ভুলিওনা নন্দিগ্রাম ।

ভুলিও না , মেদিনীপুর সিপিএম এর জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের হুঙ্কার ,
" তপন শুকুর , আমাদের দলের সম্পদ " মোদের অহঙ্কার !

হে বঙ্গ , ভুলিও না , কতো দুঃখ বুকে লয়ে কমরেড ইনকিলাব খাঁ বলিয়াছিল বার বার ,
"এতদিন বলিয়া আসিয়াছি ‘লাঙ্গল যার, জমি তার৷’ আজ কী করে বলিব, ‘পুঁজি যার, জমি তার?"

ভুলিও না সিঙ্গুরের কথা , হাজার একরের প্রতি টাটার মনের ব্যাথা ।ভুলিওনা কৃষকের ঘাম , যার ওপর টাটার ভাঙ্গা দালান , আজও গায় শোষকের জয়গান ।

ভুলিও না , নন্দিগ্রামের সোমা বেরা আজও তাঁর স্বামীর প্রতিক্ষায় চক্ষে অস্রু , আর সিঁথি তে সিঁদুর মাখিয়া , মালতী জানা কোর্টের দ্বারে গণধর্ষণের বিচারের আশায় , রয়েছে বুক বাঁধিয়া ।

ভুলিওনা বঙ্গেরে রক্তাক্ত ইতিহাস , বারুদের ঝাঁজালো গন্ধের বাতাস ।ভুলিও না তাপসি মালিকের কঙ্কাল । ভুলিওনা ধর্ষিত মা , মাটি , মানুষের চিৎকার , মনে রেখো চিরকাল ।

হে বঙ্গ , যদি আজ অদক্ষ শাসনে তোমার শ্বাস হয় বদ্ধ , যদি গণতন্ত্রের বাক হয় রুদ্ধ , তুমি কি মাপ করিবে সেই হার্মাদ রাজ ? সেই দাম্ভিক বুদ্ধ ?
Read More

মোদী কে ক্লিনচিট সিটের ... ( Narandra Modi The murderer )

ব্রেকিং নিউজ ...

১ > ২০০২ সালে গুজরাত দাঙ্গায় প্রাণ হারানো ৬৯ জনের মধ্যে ছিলেন জাকিয়ার স্বামী এহসান জাফরিও। জাকিয়া সুবিচারের আশায় কোর্টের দারস্ত হয়েছিল জাকিয়া । কিন্তু হায় , বিচার ব্যাবস্থার পরিহাস , অন্ধ আইনের পরিণতি । স্বামী খুনের সুবিচার পাওয়া হল না জাকিয়ার , যেখানে তিনি নিজে প্রত্যক্ষ দর্শী ছিলেন ।

পুরো ভারত জানে গুজরাট দাঙ্গায় কার হাত ছিল । এমনকি আর এস এস এর দালাল গুলো স্বীকার করে অকাতরে , বলে যা হয়েছে ঠিক হয়েছে । কিন্তু ক্লিঞ্চিট পাওয়ার পর মোদী বলেছে " সত্যমেব জয়তে , সত্যের জয় হবেই " ।

কিউরিয়াস মাইন্ড - কতো বড় মাপের একজন ক্রিমিনাল , একজন নির্লজ্জ মিথ্যেবাদী টেলিভিশনে দারিয়ে হাসি মুখে খুন করার পর এই কথা বলতে পারে ? তিনি আমাদের ভাবি প্রধানমন্ত্রী ।

মোদীর ক্লিঞ্চিট পাওয়ার পর বিজেপি সমর্থক রা বাজি পুরিয়ে উৎসবে মেতেছেন । তাদের বলতে চাই , বন্ধু , তোমরা তোমাদের নেতার খুশির উৎসব পালন করছ না । উৎসব করছ ৬৯ জনের খুন হওয়ার , জাকিয়ার স্বামীর খুন হওয়ার , একজন স্ত্রি তার স্বামীকে হারিয়েছে , পালন করছ সেই উৎসব , পালন করছ ৬৯ টি পড়িবারের স্বজন হারানোর উৎসব । করো এতেই তোমাদের মানায় ।

২ > জলপাইগুড়ি তে সাইকেল বোমা বিস্ফোরণ , ৬ জন মৃত্যু , ১১ জন আহত । পুলিশের সন্দেহ কে এল ও র দিকে । আজকে কে এল ও এর শহীদ দিবস ছিল । পুলিশের ধারণা কে এল ও এই ঘটনায় জড়িত ।

কিউরিয়াস মাইন্ড - বন্ধু আমরা জানি , তোমাদের দাবী আছে , তোমরা অকারনে হাতিয়ার তুলে নাও নি । কিন্তু তোমরা যাদের মেরেছ , তাদের শত্রু আর তোমার শত্রু এক । সম্ভব হলে শত্রুর শত্রু কে বন্ধু মেনে নিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই কর । এভাবে সাধারণ মানুষ মেরে তোমরা তোমাদের বন্ধুদের ই ক্ষতি করছ । আর যদি হিংসার রাস্তা একান্তই ছারতে না পারো , তবে তাদের মারো , যারা ৬৯ জন কে খুন করার পর টেলিভিশনে দারিয়ে হেসে বলছে " সত্যমেব জয়তে " ।
Read More

Thursday 12 December 2013

সমকামিতা নিয়ে হাইকোর্টের ও সুপ্রিম কোর্টের রায় , ও একটি চায়ের দোকানের বিতর্ক

পচা দার চায়ের দোকানে , #আনন্দবাজার হাতে নিয়ে বসে দাস বাবু । সাথে রয়েছেন অনুচাঁদ বাবু ফন্দি বাবু আর দাস বাবুর ভাই । বিষয় #সমকামিতা ।

দাস বাবু > পচা দা , দেখস ? সমকামিতা নিয়া কত্ত বড় হেডলাইন , মনে হয় দেশের সব খবর উদাও হয়া গেসে গিয়া । পইরা আসে এই সমকামিতা ।

অনুচাঁদ বাবু > কি যে বলেন না মশাই , সমকামিতার থেকে বড় কিছু সাবজেক্ট এখন আছে নাকি ? মানুষ কাকে ভালোবাসবে তাতেও সরকারের উঁকি ? এই নিয়ে হাইকোর্ট এর অন্যায় রায় মেনে নিতে বলছেন ?

দাস বাবু > কয়দিন আগে যে টেট পরীক্ষা হইল , তার খবর নিসো ? ঐযে ১৭ লাখ নাকি ৪৮ লাখ , পরীক্ষা দিতে গিয়া ভিরের চোটে ৩ জন মারা গেলো , আর পরে চাকরি হইল মাত্র ১৫ হাজারের । ওইটা কি সরকারের অন্যায় না ? ওইটা কি কোনও ছোটো ইস্যু ?

ফন্দি বাবু > দাস বাবু, ওগুলো মশাই চলতি সিস্টেমের বাইরের কথা । আমরা রাজনীতি থেকে শুরু করে ফেসবুক , যাই করি না কেন , সব চালু সিস্টেমের ভেতরে । আর তাই চালু সিস্টেম কে সন্তস্ট রেখে টি আর পি বাড়াতে গেলে ঐ সেক্সুয়াল ইস্যুই পাব্লিক খাচ্ছে । দেখলেই তো আনন্দ বাজারের হেডলাইন , বুঝলেই তো মিডিয়ার ট্রেন্ড ...

দাস বাবু > ফন্দি , তুমি ঠিকি কইস , কিন্তু কথা হইল গিয়া এইডা তো কোনও ইস্যুই না , তা জোর জবরদস্তি এইডা রে ইস্যু বানানির কোনও মানে হয় ? তোমাগো ভাবসাব এমন , জানি ভারতে সকারের ভয়ে এর আগে কেউ কোনও দিন হোমো সেক্স করেই না ... আর যারা করসে , সবাই রেই জেলে ঢুকায়া দিসে ।। আদালত তো সিঙ্গুরের চাষি গুলার জমিও ফিরায়া দেয় নাই... সেইটাও তো হাই টি আর পি আসিল , কিছু তো কইলা না ...

অনুচাঁদ বাবু > ওহে পাগলা দাসু , এটা ভালোবাসার বিষয় । মানুষ কে স্বাধীন ভাবে ভালোবাসতে দিতে হবে । এতে সরকারের হস্তক্ষেপ মানা যায় না।।

দাস বাবু > অনুচাঁদ , আমি তো শুনছিলাম আদালত যৌনতা নিয়া রায় দিসে , ভালোবাসা মানে কি শুধুই যৌনতা ?

অনেক্ষন হাউ মাউ চলার পর মুখ খুললেন

দাস বাবুর ভাই > কালকে একটা কৌশিক নামের আঁতেল ফেসবুকে তোমার মতই পোস্ট দিয়েছিল । সেখানে সে সমকামী দের পাগলের সাথে তুলনা করেছিল । তুমিও বলছ , ওদের গুরুত্ব কম ? তোমরা তো দেখি রামদেব বাবা কেও ছারিয়ে যাবে ...

দাস বাবু > পাগল কিভাবে হয় ? মানসিক ভারসাম্য না থাকলে ? সেক্সুয়াল ভারসাম্য না থাকলে তাকে কি বলা হয় ? আমি তো গুরুত্ব কম কই নাই, আমি কইসি দেশে সমকামী দের থেইকা ধর্ষিতা বেশি । আদালত তো ওদের ভুল রায় দিলে এতো হই চৈ হয় না , তো এই কয়ডা সমকামী রে নিয়া এতো হৈচৈ কিসের ?

ফন্দি বাবু > কি যে বলেন মশাই , কালকেই তো কোলকাতায় প্রায় হাজার তিনেক সমকামী মিছিল করেছে ।। আবার ১৭ জন গার্জিয়ান আদালতে আবেদন করেছে এই রায় বিবেচনা করার জন্য । আপনি বলেন কয়েক টা ?

দাস বাবু > ঐ প্রাইমারি স্কুলের চাকরীর জন্য ১৭ লাখের মিছিল দেখসিলা ? তিনজন মারা গেসে ভিরে চাপা পইরা ।। তাদের সামনে তিন হাজারের মিসিল বড় আপনের কাসে ? লাখ লাখ ধর্ষিতার গার্জিয়ান যে আদালতে ধর্না দিয়া পইরা থাকে বিচারের আশায় , তাদের থেকে ১৭ জন বড় আপনার কাসে ???
Read More

Sunday 8 December 2013

কিভাবে ফায়ার ফক্সে বাংলা ফন্ট দেখবেন (How to see bangla / bengali fonts in Firefox)

To fix it in your latest firefox versions (22.0 or later) simply go to
tools > options > content
there you will see the fonts & color menu in the mid section
click on advanced and you will go to advanced fonts field
select the following:
font for: Bengali size:16
proportional: Sans Serif
serif: Siyam Rupali
sans serif: Siyam Rupali
Monospace: Siyam Rupali size:14
DO NOT UNCHECK "Allow pages to select their own fonts, ..." checkbox
and then at the bottom
Set Fallback Character Encoding: Western (ISO-8859-15)
Click ok and ok and voila there you are. All of your problems has been fixed :)

Read More

Friday 6 December 2013

আজকের দিনে নেলসন মেন্ডেলার মৃত্যু , The death of nelson mandela is today



আজকের দিন টা দুটি কারনে স্পেশাল , একই সাথে দুঃখের । 

1 >"মৃত্যু প্রকৃতির নিয়মেই হয় , আবার সেই ক্ষত পূরণ ও হয়ে যায় । কিন্তু কিছু কিছু মৃত্যু এমন থাকে , যার ক্ষত পূরণ হতে লেগে যায় শত শত বছর । " 

নেলসন_মেন্ডেলা , যার কথা শুধু ছোটো বেলার ইতিহাসের পাঠ্য পুস্তক থেকে বোঝা সম্ভব নয় । তার লড়াই টা যে কতো টা কষ্টের ছিল , তা শুধু যারা লড়াইয়ের ময়দানে আছেন তাদের দ্বারাই বোঝা সম্ভব । নীতিগত প্রশ্ন তুলে তার লড়াই , তার সংগ্রাম কে ছোটো করার , যোগ্যতা , ক্ষমতা , দুঃসাহস কোনও টাই আমার নেই । তিনি গতকাল মারা গেছেন , খবর টা আমরা বেসিরভাগই আজকে পেয়েছি ।

একজন মানুষের তার দেশের প্রতি , দেশের মানুষের প্রতি , জাতীর প্রতি কতটা আবেগ থাকলে , কতটা ভালবাসা থাকলে বৈষম্যবাদী শক্তির সাথে লড়াই করে দীর্ঘ ২৭ বছর দ্বীপান্তরে থাকার পড়েও লড়াই করার শক্তি থাকতে পারে মনে , শরীরে তা একমাত্র সেই মহান মানুষটির জীবন উপলব্ধি করেই বোঝা সম্ভব , ফেসবুকে বসে স্ট্যাটাস দিয়ে নয় ।

আমার জন্ম বর্ষে (১৯৯৩) তিনি নোবেল পান । কিন্তু নোবেল পাওয়ার আশায় তিনি লড়াই করেন নি , করেছেন মানুষের মুক্তির জন্য । তার চলে যাওয়া একজন মহা পুরুষ এর মৃত্যু থেকেও অনেক অনেক বেশি কিছু । ইউনুসের মতো নোবেল ধারি মহাপুরুষ অনেক আছেন । কিন্তু নেলসন মেন্ডেলার মতো কজন আছেন , যারা লড়ে গেছেন জীবনের শেষ দিন অবধি ? হ্যাঁ জীবনের শেষ দিন , কারন আজও বর্ণ বিদ্বেষের যা রূপ , তা মেন্ডেলাকে পীড়িত করত ।

সৃষ্টির নিয়মেই মানুষকে চলে যেতে হয় , কিন্তু মেন্ডেলার মতো একজনের চলে যাওয়া শুধু একজন মানুষের চলে যাওয়া নয় , চলে যাওয়া একজন যোদ্ধার , একজন মুক্তি দাতার , একজন ভগবানের( ! ) চলে জাওয়া । একজন মানুষের চলেজাওয়ায় আরও দশজন তার স্থান দখল করে নিতে পারে । কিন্তু মেন্ডেলারা তো ১০০ বছরে একজন জন্মান । তাই এই ক্ষত এতো সহজে ভরার নয় । যদি একটা বারের জন্য তাকে ছুঁয়ে দেখতে পারতাম , দুক্ষ থেকে যাবে সারা টা জীবন ।

২>আজকে ৬ ডিসেম্বর , মৌলবাদ ও ধার্মিক (!) দের অমর কীর্তি , বাবরী মসজিদ ধ্বংসের দিন আজ । এই দিনে আবার মুসলিম দেশ গুলীতে কতো কতো ধার্মিক (!) হিন্দু বাড়ি জ্বালিয়েছে তার ঠিক নেই । এই অমর কীর্তির কৃতিত্ব অনেকেই শুধু বিজেপি কে দিয়ে থাকে । কিন্তু একটু গভীরে দেখলেই বোঝা যায় , কংগ্রেস ও সমান ভাবে এই কৃতিত্বের দাবিদার । তাই কংগ্রেস ও বিজেপি উভয় কেই এই কাজের জন্য জাতীয়তা বাদী অভিনন্দন জানাই ।

এই দুই খবর কে ছারিয়ে রাজ্য রাজনীতির ব্রেকিং নিউজ ও একটা আনন্দ সংবাদের দিকে একটু নজর রাখা যাক -

৩> জলপাইগুড়ি জেলা ফরওয়ার্ডব্লকের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক প্রবাল রায় সহ জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর প্রাক্তন সদস্য তথা যুবলীগের প্রাক্তন সম্পাদক শুভঙ্কর মিশ্র ও আরও একঝাক জেলা নেতৃত্ব তৃণমূলে যোগদান করেন বৃহস্পতিবার । উদয়ন বাবুদের মন্তব্য " বামপন্থী দল থেকে ডান পন্থি দলে যোগদান করা চুরান্ত নীতিহীনতার পরিচয় "।, এই প্রসঙ্গে প্রবাল বাবু রা বলেছেন সিপিএম এর নির্দেশ মতো চলা দল কমল গুহের দল নয় , বামপন্থী দল নয় । বর্তমান রাজ্য রাজনীতির দিকে নজর রেখে তাদের তৃনমূল কেই সব থেকে বামপন্থী বলে মনে হয়েছে । ( আমার চিন্তা ভাবনা কে সমর্থন করার জন্য প্রবাল বাবু কে থ্যাংকস  ) বৃহস্পতিবার তারা তৃনমূল ভবনে মুকুল রায়ের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা গ্রহন করেন ।

Read More

Thursday 5 December 2013

C P I M এবং হঠকারী বামপন্থী রাজনীতির সেকাল একাল ...


ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি ( মার্ক্সবাদী ) ত্রিপুরা বাদে সমস্ত ভারতে রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া হওয়ার পর্যায় । পশ্চিম বাংলার ক্ষেত্রে সি পি এম টিকে আছে শুধু শহর গুলোর পার্টি অফিস আর মিডিয়া তে । যে সি পি এম এক সময় পশ্চিম বঙ্গের সমস্ত বাড়ির হাড়ির খবর জানতো , আজকে তাদের একটি পতাকা গ্রাম বাংলার বুকে খুঁজে বের করা দুস্কর । এককালে যারা সিংহ সেজে মানুষকে রক্ত চক্ষু দেখিয়ে ফিরত , আজকে তারা ইঁদুর সেজে গর্তে ঢুকে আছে । বাংলার অধিকাংশ সি পি এম পার্টি অফিস হয় ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে , নয় সবুজ রং করে নেওয়া হয়েছে । সর্ব ভারতীয় ক্ষেত্রে সি পি এম এর তিন রাজ্যের রাজনীতির থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ বেশি প্রাসঙ্গিক  ।, নতুন কোনও রাজ্যেও সি পি এম এর শক্তি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ । এমতাবস্থায় সি পি এম এর চিরকালের দক্ষিনপন্থি দের সাথে আন্ডার স্ট্যান্ডিং এর রাজনীতি আরও একবার প্রকাশ্যে চলে এসেছে । পশ্চিম বঙ্গের ক্ষেত্রে সি পি এম কংগ্রেসের চাকর সি বি আই দিয়ে তৃণমূলের পর্দা ফাস করাতে চাইছে, কংগ্রেসের সাথে গলা মিলিয়ে বিধানসভা বয়কট করছে। আর সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িকতা কে রুখতে সাম্রাজ্যবাদী কংগ্রেসের সুবিধা করে দিতে স্রেফ ভোটের রাজনীতি করার জন্য কনভেনশন ডাকছে । মার্ক্সবাদের স্পষ্টতই সাম্রাজ্যবাদ কে সাম্প্রদায়িকতা থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে । এর কারন পড়ে বিশ্লেষণে আসবো । কিন্তু নামের পাশে মার্ক্সবাদী লিখে মার্ক্সবাদের নামে যে কালিমা সি পি এম লিপ্ত করছে , তার থেকে তাদের রাজনৈতিক তুঘলিকি বৃত্তি আর শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের কাছে আজ অজানা নয় । একটা সময় ঠিক করেছিলাম , প্রবন্ধের শিরনাম দেবো “ নির্লজ্জতার অপর নাম C P I M “ কিন্তু ভদ্রতার খাতিরে আটকে যাই ।

কংগ্রেস সাম্রাজ্যবাদী । এই সুত্রের ওপর ভিত্তি করেই সি পি এম এর বড় হয়ে ওঠা । সি পি আই এর সাথে বিরোধ , খাদ্য আন্দোলন , নকশাল দের গল্প সকলেরই জানা । জন্মের পর থেকেই সি পি এম তার শত্রু হিসাবে কংগ্রেস কে ধরে নিয়ে বিরোধিতা ও আন্দোলনের মাধ্যমে জনসমর্থন গড়ে তোলে । এরপর সময় এলো বিপুল জনসমর্থন পেয়ে ক্ষমতার মধু ভোগ করার । কিন্তু ১৯৬৭ ও ১৯৭০ এ পর পর যখন যুক্ত ফ্রন্ট সরকার কে গদি থেকে নামানো হল । শুরু থেকেই সি পি এম এর নীতি গত কিছু দুর্বলতা থাকায় সি পি এম হয়ে উঠল ক্ষমতা পিপাসু । তাই দু দুবার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সি পি এম ক্ষমতাসীন থাকার উদ্দেশ্যে বুর্জোয়া গোষ্ঠীর সাথে সেই “ আন্ডারস্ট্যান্ডিং “ এর রাজনীতি শুরু করলো ।

একটি বামপন্থী দল জন সমর্থন পায় মূলত শ্রেণী সংগ্রামের মধ্যদিয়ে । বামপন্থী দলের মূল শক্তি থাকে শোষিত শ্রেণী ও তার সমর্থন । আর এই সমর্থন লাভের জন্য বামপন্থী দল গুলো কে লড়াই করতে হয় আপোষহীন ধারায় , শোষক শ্রেণী কে চ্যালেঞ্জ করে । আর লড়াই হতে হয় শোষিত শ্রেণীর স্বার্থে , তার দাবী দাওয়া ও অধিকার অর্জনের লক্ষে । শুরুর দিকে হয়েছিলো তেমনটাই । তবে ক্ষমতাসীন থেকে আন্ডারস্ট্যান্ডিং এর রাজনীতি করতে গিয়ে এই মাঠে ময়দানের আন্দোলন সি পি এম এর পক্ষে চালিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না । তাই সমর্থন আর গনভিত্তি হারানোর সম্ভাবনাও ছিল প্রবল ।

তাই এখন একটাই পথ ছিল খোলা । কংগ্রেস , বিজেপির মতো দলগুলি যেভাবে জনতার মাঝে তাদের প্রভাব ধরে রাখে , ঠিক সেই দক্ষিন পন্থি পদ্ধতি অনুসরন করলো সি পি এম । অর্থাৎ ছিটে ফোঁটা ক্ষমতার মধু বিতরনের মাদ্ধ্যমে । জ্যোতি বাবুর মতো বিচক্ষন মানুষ এর সূক্ষ্ম পদ্ধতিও অবশ্য বের করে ফেলেছিলেন । সেটি ছিল ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যাবস্থা । এর মাধ্যমে মধু বিতরেনের দক্ষিন পন্থি পদ্ধতি আম জনতাকে ক্ষমতা দেওয়ার বাম পন্থি ইমেজ ধরে রেখে প্রচলন করা অবশ্যই কাবিলে তারিফ । আর এই জনপ্রভাব বজায় রাখার সুন্দর বাম ইমেজের দক্ষিন পন্থি পদ্ধতি রাজীব গান্ধি করে নিলেন রোল মডেল ।

কিন্তু দক্ষিনপন্থি এই পদ্ধতি যেখানে সমর্থনের বেস আছে সেখানেই কার্যকর । কিন্তু আন্ডারস্ট্যান্ডিং এর রাজনীতি নতুন করে মাঠে ময়দানে থেকে সমর্থন তৈরিতে বাঁধা দেয় । তাই দুই তিনটা রাজ্য ছারা সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে সি মি এম এর বিকাশ স্তব্ধ হয়ে যায় । স্বাভাবিক ভাবেই কেদ্রিয় রাজনীতির মূল ধারায় সি পি এম এর গুরুত্ব কমতে থাকে । তাই তখন দক্ষিন পন্থি দের আর একটু ঘেঁসে কেন্দ্রিয় রাজনীতিতে সি পি এম নতুন বন্ধু হিসাবে খুঁজে নেয় বি যে পি কে ৮৯ সালে ।

কিন্তু সংসার বেশিদিন টিকলো না । কংগ্রেসের পালে যখন মন্দার হাওয়া , তখন ৯২ সালে বিজেপি ঘটাল বাবরি মসজিদের কাণ্ড । ব্যাস পাওয়া গেলো সুযোগ । এখন সি পি এম এর সামনে বড় শত্রু সাম্রাজ্যবাদ নয় , শত্রু হয়ে উঠল সাম্প্রদায়িকতা । কিন্তু মার্কসবাদ তো উলট পুরাণ ই শোনায় । মার্ক্সবাদের প্রধান দুটো দ্বন্দ্ব মূলক বিষয় হল কাঠামো ও উপরিকাঠামো , বেস ও সুপারস্ট্রাকচার । এই ক্ষেত্রে অর্থনীতি হল কাঠামো , রাজনীতি , দর্শন , সংস্কৃতি হল উপরিকাঠামো । বেস এর ভিত্তিতেই যেহেতু সুপারস্ট্রাকচার তৈরি হয় , তাই মার্ক্সবাদ সর্বদা বেস কেই প্রাওরিটি দিয়ে থাকে । ভারতের রাজনীতির ক্ষেত্রে সাম্রাজ্যবাদ হল , একটি অর্থনৈতিক বিষয় ,অর্থাৎ বেস আর সাম্প্রদায়িকতা হল সংস্কৃতি গত বিষয় অর্থাৎ সুপারস্ট্রাকচার । তাই সাম্রাজ্যবাদ এর থেকে বড় শত্রু কখনোই সাম্প্রদায়িকতা নয় । কিন্তু আন্ডারস্ট্যান্ডিং এর রাজনীতি তে এতো ভাবলে চলে না। ক্ষমতার কাছাকাছি থাকতে হলে যার পালে হাওয়া , তাকেই আঁকড়ে ধরতে হবে । এখন সি পি এম এর সঙ্গি হল কংগ্রেস । এর ফলে দক্ষিনপন্থি উপায় ধরেই , আন্দোলন ছারাই কেন্দ্রিয় রাজনীতি তে সি পি এম এর গুরুত্ব বাড়তে থাকে , ২০০৪ এ যার আমরা চুরান্ত রূপ দেখতে পাই ৫০ + আসন লাভের মধ্য দিয়ে  ।

বাম্পন্থার আদর্শ নিয়ে রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে বেড়ে ওঠা দলটা দক্ষিন পন্থি শর্টকাটে আচমকাই ফুলে ফেঁপে উঠল । একদিকে বেসরকারিকরণ রুখে যেমন তার হিরো সাজছিল , তেমনি সেজ আইন নিরবে মেনে নিয়ে , ডি এফ আই ডি এর টাকায় নিজেদের শাসিত রাজ্য পশ্চিম বঙ্গের শ্রমিক কর্মচারী দের ভি আর এস দিয়ে খুচরো ব্যাবসায় বড় পুঁজি ঢোকার ব্যাপারে নিরব থেকে আন্ডারস্ট্যান্ডিং এর রাজনীতি টাও চালিয়ে যাচ্ছিল । সোশ্যাল ডেমোক্রেসির পালে বাতাস যখন ভরপুর , তখনি অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ কে সত্য করে ঘটে গেলো সিঙ্গুর নন্দিগ্রাম । আন্ডার স্ট্যান্ডিং এর রাজনীতির সাথেই যে বাম ইমেজ টা সি পি এম ধরে রেখেছিল , তা রাতারাতি উধাও হয়ে তাদের দক্ষিনপন্থি বুর্জোয়া রাজনীতির নগ্ন রূপ দেশবাসীর সামনে প্রকাশিত হয়ে গেলো ।

বাম ইমেজ এর মেকাপ যখন ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাবার মুখে , তখনি আবার তার ওপর চন্দনের প্রলেপ দেওয়ার উপায় হিসাবে কারাত রা খুঁজে বের করলেন পরমানু চুক্তি ইস্যু । যার সর্বশেষ ফলাফল সমর্থন প্রত্যাহার । বাম ইমেজ তেমন একটা পুনরুদ্ধার না হলেও বুদ্ধ বাবু দের ক্ষমতার কাছা কাছি থেকে আন্ডার স্ট্যান্ডিং এর রাজনীতি করার প্রত্যাশা এতে হুমকির মুখে পড়ল । তখনি আসলো “ দ্যা থার্ড ফ্রন্ট “ আইডিয়া ।

দুই নৌকায় পা দিয়ে চলা টা যে বিপদজনক তা আরও একবার বুঝিয়ে কংগ্রেস হাওয়ায় তৃতীয় বিকল্প উপহাসের বিষয়ে পরিনত হল লোকসভা নির্বাচনে । বাম রাজনীতি , ও ক্ষমতার কাছা কাছি থেকে আন্ডারস্ট্যান্ডিং এর রাজনীতি করা দুটো স্ববিরোধী বিষয় । কংগ্রেস কে বাইরে থেকে সমর্থন দিয়ে তারা এই বিরধের একটা আপাত সমাধান বের করে নিয়েছিলেন , যেখানে সাফল্যের ভাগিদার হওয়া যায় , কিন্তু ব্যর্থতার নয় । কিন্তু রাজনীতি যদি এতই সোজা হতো , কবেই না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হয়ে যেতেন ... বুর্জোয়া শ্রেণী তখনি ক্ষমতা ভোগ করতে দেবে , যখন তার নির্দেশ মতো শিল্পায়নের জন্য লাঠি গুলি চলবে , গণ আন্দোলন দমন হবে । আর সেটাই হল সিঙ্গুর ও নন্দিগ্রামে । এই এক নৌকাতেই চলতে থাকলে হয়তো  মার্ক্সবাদী নাম টা পার্টি কংগ্রেস ডেকে মুছে দিতে হতো , কিন্তু কেন্দ্রিয় রাজনীতি তে টিকে থাকা যেত , খমতাও ভোগ করা যেত । কিন্তু কারাত বাবু রা বাম ইমেজ হারাতে নারাজ । তাই পরমানু ইস্যু তে সমর্থন প্রত্যাহার করে ওপর নৌকা তে এক পা দিয়েই দিলেন ।

এই দুই নৌকায় পা দিয়ে চলার চুরান্ত পরিণতি হল পশ্চিমবাংলা ও কেরলের বিধানসভা নির্বাচনে । ক্ষমতায় থাকার দক্ষিনপন্থি , আন্দোলনের মাধ্যমে গণসমর্থন ধরে রাখার বামপন্থী এই দুই নৌকার মাঝে যে শুধু ভরাডুবি পন্থা রয়েছে , তা প্রমাণিত হল এই নির্বাচনে । বাংলায় খাবারের অভাব নেই , তাই পুঁজি বাংলার মানুষের আগা গোঁড়াই না পসন্দ । তাই বাংলার ক্ষেত্রে এই নির্বাচন ও হয়েছে বামপন্থী ইস্যু তেই । শুধু নামে বামপন্থী রা কাজে ডান পন্থি ভুমিকা নিলেন , আর ডান পন্থি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুযোগ বুঝে একটি বামপন্থী নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করে ফেললেন ।  যারা সি পি এম এর হয়ে মিছিল করলো , তারাই আবার তৃনমূল কে ভোট দিল ।

কাজেই বোঝাই যাচ্ছে ভরাডুবি পন্থায় চললে কি হতে পারে ভবিষ্যৎ । দুই পথের মধ্যেই কোনও একটা বেঁছে নিয়েই চলতে হবে সি পি এম কে । একটা দক্ষিনপন্থায় মিশে গিয়ে কংগ্রেস বিজেপির মতো অলটারনেটিভ পাওয়ারে পরিনত হওয়া , এতে জনসমর্থন ঘুরে ঘুরে আসবে আর ক্ষমতাও মাঝে মাঝে পাওয়া যাবে । আর একটা গণ আন্দোলনের পথ , এই পথে সলিড জন সমর্থন আর বিকাশের ভিত্তি পাওয়া যাবে , তবে এই পথ রক্ত আর ঘামে পিচ্ছিল ।

কিন্তু সি পি আই এম এর নেতা কর্মী রা যে এখনো বাম সি পি এম ঘরানার বাম পন্থা নিয়ে মেতে আছেন , তাতে দুঃখজনক হলেও ভবিষ্যতে তারা আদর্শের বালাই ভুলে দক্ষিন পন্থাকেই তাদের রাজনীতির স্রোত হিসাবে আপন করে নেবে বলেই মনে হচ্ছে । আজকের এই সি পি এম এর ভরাডুবির পর যে মতাদর্শ গত আত্ম সমিক্ষা তারা চালাচ্ছে তাতে সৎ নেতা , কর্মী দের অনেকের মনেই বিপ্লব শব্দ টা ভেসে উঠেছে । ভবিষ্যতে তারা হয় হতাশ হয়ে দল ছাড়বেন , অন্যথায় প্রাসঙ্গিক থাকার চেষ্টায় নিজের মতো করে নতুন যুক্তি সাজিয়ে নেবেন , যা ইতি মধ্যেই অনেকে শুরু করেছেন । 

Read More

Monday 2 December 2013

মহান শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর জন্মদিন আজ ৩রা ডিসেম্বর ... ( Today is birthday of Khudiram Basu )




শহীদ ক্ষুদিরাম বসু অমর রহে ।।
বন্দে মাতরম ।।
(৩ রা ডিসেম্বর , ক্ষুদিরাম বসুর জন্মদিন )

হয়তো তার মা ও কখনো ভাবতেই পারেনি মাত্র তিন মুঠো ক্ষুদের বিনিময়ে তিনি যাকে বিক্রি করে দিচ্ছেন , সে বড় হয়ে অখণ্ড ভারতের স্বাধীনতা ও বিপ্লবী আন্দোলনের সবথেকে উজ্জ্বল নক্ষত্র দের মধ্যে একটি হয়ে তরুন প্রজন্ম কে বিপ্লবের আপোষহীন ধারার দিশা ও পথ দেখিয়ে যাবেন যুগের পর যুগ ধরে । 

১৮৮৯ সালে আজকের দিনেই জন্ম নিয়েছিলেন ক্ষুদিরাম বসু । গল্প আছে , মা লক্ষ্মীপ্রিয় দেবী পরপর অনেক কজন সন্তানকে হারানোর পর ক্ষুদিরাম কে হারাবার ভয়ে মাত্র তিন মুঠো ক্ষুদের বিনিময়ে তাকে তার দিদি অপরূপা দেবীর কাছে বিক্রি করে দেন , সেই থেকেই তাকে সবাই ক্ষুদিরাম বলে চেনে ।

ছোটো বেলায় ক্ষুদিরাম সমাজের অথাকথিত ভালো ছেলেদের মধ্যে ছিলেন না । তিনি মেধাবী হলেও শিক্ষকদের কাছে দুরন্তপনার জন্য প্রয়ই তিরস্কার পেতেন । তৎকালীন কুসংস্কার আচ্ছন্ন ভারতের ঘোর কালো কুসংস্কার গুলো তার হৃদয়ের দিপ্তি কে ডোবাতে পারেনি , স্পর্শ করতে পারেনি । তিনি তার সহপাঠী দের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ভুত তাড়ানোর ও মাড়ার দল , যেগুলো কে আমরা এখন যুক্তিবাদী সংগঠন বলি । এর জন্য তাকে বড়দের কাছ থেকে অনেক তিরস্কার ও পেতে হয়েছিল । কিন্তু ডঃ কালামের কথা সত্য করে ক্লাসের শেষ বেঞ্চ থেকেই উঠে এসেছিল সেই বিপ্লবী স্ফুলিঙ্গ ।

রতনে রতন চেনে , সত্তেন্দ্রনাথ বসুর চোখে অচিরেই ধরা পরলেন ক্ষুদিরাম বসু । ক্ষুদিরাম বসুর অন্তরে থাকা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের প্রতি বিদ্বেষ অনুভব করে ক্ষুদিরাম কে তিনি তার সশস্ত্র বিপ্লবী দল " যুগান্তর "এর সদস্য করে নেন । আর তখন থেকেই তার বাড়ির সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায় ।

১৯০৬ সালে সম্ভবত মেদিনিপুরের মারাঠা কেল্লায় এক শিল্প প্রদর্শনী আয়োজিত হয় । ক্ষুদিরাম গেছিলেন সেখানে " সোনার বাংলা " নামক বিপ্লবী পত্রিকা বিক্রির জন্য । সেই সময় এক পুলিস তার হাতের কব্জি ধরে বলে " কেয়া কার রেহে হো ? " , ক্ষুদিরাম সজোরে তার নাকে এক ঘুসি বসিয়ে বলে " কুছ পরোয়া নেহি " । , বয়েস কম হওয়ায় কিছুদিন আত্ম গোপনে থাকার পর পুলিস মামলা তুলে নেয় । কিন্তু ব্রিটিশ শাসনকে একটা ঘুসি মেরেই এই আগুন তো নেভার ছিল না । তার উদ্দেশ্য যে ছিল দেশ কে স্বাধীন করা , ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের ভীত কাঁপিয়ে দেওয়া ।

অচিরেই সুযোগ এলো । অত্যাচারী ম্যাজিস্ট্রেট বিপ্লবিদের যে কোনও মূল্যে দমন করতে ব্যাস্ত । ক্ষুদিরাম আর প্রফুল্ল চাকির ওপর দায়িত্ব পড়ল কিংসফোর্ড কে হত্যা করার । হয়তো এই খবর গয়েন্দা রাও পেয়ে যায় , কিংসফোর্ড এর বদলি হয়ে যায় মজফফরপুরে । কিন্তু ক্ষুদিরাম তো হার মানার পাত্র না। টানা কিছুদিন তার গতিবিধির ওপর নজর রাখার পর ১৯০৮ সালের ৩০ শে এপ্রিল তারা লুকিয়ে থাকলো পথের ধারে জঙ্গলে , বোমা হাতে নিয় । কিন্তু লক্ষভ্রস্ট হল তারা । সেই বিস্ফোরণে কিংসফোর্ড বেঁচে যায় , কিন্তু দুক্ষজনক ভাবে মারা যায় অ্যাডভোকেট কেনেডির স্ত্রী ও তাঁর মেয়ে ।

দুজনেই ধরা পরলেন । প্রফুল্ল নিজ রিবলভড়ের গুলীতে আত্মত্যাগ করলেন । কিন্তু ক্ষুদিরাম ধরা দিলেন । ফাঁসির রায় হল ক্ষুদিরামের । ফাঁসির মঞ্চে ওঠার আগে জখন ক্ষুদিরামের কাছে তার শেষ ইচ্ছা জানতে চাওয়া হল , তখন সে বলেছিল " আমি খুব ভালো বোমা বানাতে পারি , সমস্ত ভারতবাসী কে তা সিখিয়ে দিয়ে যেতে চাই " ।, তার বুকে বন্ধি থাকা বারুদের গন্ধে সেদিন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বুক কেঁপেছিল দুরুদুরু । তাই রায় হওয়ার মাত্র ৭ মাসের মধ্যে ১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট তার ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছিল ।

ক্ষুদিরাম আজকে আমাদের মধ্যে নেই । আমরা তাকে নিয়ে জোক বানিয়েছি " পুরকিতে ক্ষুদিরাম " ।, আমাদের নিজেদের কাপুরুষত্ব ঢাকতে আমরা বলি ক্ষুদিরাম বোকা ছিল , যে মাত্র ১৮ বছর বয়েসে অপরের ব্রেন ওয়াস খেয়ে প্রান দিয়েছিল । আজকে দুনিয়া জুড়ে চেষ্টা চলছে বিপ্লবের আপোষহীন ধারার এইসব ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়ার। আমরা মত্ত হয়েছি ভোগবাদের সাগরে সাতার কাটতে । কিন্তু যতবার জতভাবেই আমরা ক্ষুদিরাম কে বোকা বলি না কেন , খুদিরাম প্রতিবার অট্ট হাস্যে আমাদের দিকে আঙ্গুল তুলে বলে কাপুরুষ । ক্ষুদিরাম নিজের জীবন দিয়ে আমাদের দিয়ে গেলো স্বাধীন ভারতের বাতাস । আর আমরা তার জন্মদিনে সকাল সকাল ভাট বাজির স্ট্যাটাস দিতে ব্যাস্ত । টিভি তে , খবরে , কোথাও নেই তার কথা । কিন্তু ক্ষুদিরাম রয়েগেছে প্রজন্মের মাঝে , মানুষের মাঝে । ক্ষুদিরাম হাসছে তাদের অন্তরে , জ্বালিয়ে রেখেছে বিপ্লবের শিখা ।

ইঙ্কলাব জিন্দাবাদ । শহীদ ক্ষুদিরাম বসু অমর রহে ।


Read More

© 2013 Kousik's Diary , AllRightsReserved.

Designed by Kousik Das